Thursday 12 November 2015

বুদ্ধিমতী মা ......


বুদ্ধিমতী মা ......


হযরত উম্মে সুলাইম রা. ছিলেন মালেকের স্ত্রী। জাহেলী যুগে তার ঘরেই হযরত আনাস রা. জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারীদের একজন। ইসলাম গ্রহণের কারণে স্বামী মালেক ক্ষুব্ধ হয়ে শামে চলে যান এবং সেখানে মৃত্যুবরণ করেন।

অতঃপর আবু তালহা তাঁকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে তিনি বললেন, হে আবু তালহা! আমি তোমার প্রস্তাবে সম্মত আছি। কোন বুদ্ধিমতী মহিলা তোমাকে প্রত্যাখ্যাণ করতে পারে না। তবে কথা হচ্ছে, আমি একজন মুসলিম নারী, আর তুমি এখনো ইসলাম গ্রহণ করোনি।


হে আবু তালহা! তুমি কি জান না যে, তোমার প্রতিপালক আল্লাহই এ যমিন হতে উদ্ভিদ উৎপন্ন করেন?

আবু তালহা বললেন, হ্যাঁ অবশ্যই। হে আবু তালহা! তাহলে তুমি কিভাবে গাছের পুজা করো? সেটাতো একটা মাখলুক মাত্র। হে আবু তালহা! তুমি যদি ইসলাম গ্রহণ করো, তাহলে আমি তোমার কাছে বিবাহের কোন মহর দাবী করবো না। এরপর একদিন আবু তালহা কালেমা পাঠ করত: ইসলাম ধর্মে দিক্ষীত হলেন অতঃপর তাদের মাঝে বিবাহ সম্পন্ন করা হয়। আল্লাহ তায়ালা তাদের একটি ছেলে দান করেন। ছেলেটি ছিলো তাদের খুবই আদরের। হঠাৎ ছেলেটি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়লো। আবু তালহা রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবার হতে ফিরলেন। সাথে সাথি-সঙ্গী অনেকেই। প্রথমেই অসুস্থ ছেলের কথা জিজ্ঞেস করলেন, উম্মে সুলাইম বললেন, ছেলেটি অনেক দিন যাবৎ অসুস্থ। আজ সে ভাল আছে।


উম্মে সুলাইম সবাইকে খাবার পরিবেশন করলেন। খাবার শেষে সবাই চলে গেল। আবু তলহা ঘুমের প্রস্তুতি নিলেন। উম্মে সুলাইম নিজ হাতে স্বামীকে সুগন্ধি মেখে দিলেন। প্রতি রাতের ন্যায় খোশ-গল্প করলেন। অতঃপর ঘুমালেন। শেষরাতে উম্মে সুলাইম বললেন, হে আবু তালহা! যদি কেহ কাউকে কোন বস্তু ধার দেয় অতঃপর মালিক তা ফেরত চায়, তাহলে কি ধার গ্রহীতা ঐ বস্তু ফেরত না দিয়ে পারে? আবু তালহা বললেন, না, তা তো হতে পারে না।


তখন উম্মে সুলাইম বললেন, আল্লাহ তায়ালা তোমাকে একটি ছেলে ধার দিয়েছিলেন। এখন তিনি তাকে তাঁর নিকট তুলে নিয়ে গেছেন। অতএব তুমি সওয়াব মনে করে ধৈর্য ধারণ করো। আবু তালহা ইন্নাল্লিাহি ... পাঠ করলেন এবং আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া জ্ঞাপন করলেন। ভোরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পেছনে ফজরের নামায আদায় করলেন। নামায শেষে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উক্ত ঘটনা জানালেন। ঘটনা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জন্য দোয়া করলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দোয়া কি বিফলে যায়? কয়েক মাস পর আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে আরো একটি ফুটফুটে বাচ্চা দান করলেন।


বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, উম্মে সুলাইম রা.-এর নজিরবিহীন ধৈর্যের প্রতিফল হিসেবে আল্লাহতায়ালা তাকে এমন দশজন ছেলে সন্তান দান করেন যারা সকলেই কুরআনের হাফেয এবং ধারক-বাহক ছিলেন।


{আল ইছাবা : ৭/৩২৯, উসদুল গাবাহ : ৭/৩৭৬, খুলুকুল মুমিন : ৬৮}

আমরা কিভাবে আল্লাহ ও তার রাসুল(সঃ)কে ভালবাসব?


গ্রন্থঃ জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাত

STRICK on Pic.for main site
http://hadithbd.com/salah-jal-hadith.php


ভূমিকা
সূচীপত্র
পবিত্রতা (ওযূ ও তায়াম্মুম)
সূচীপত্র
মসজিদ সমূহ
সূচীপত্র
আযান ও ইক্বামত
সূচীপত্র
জামা‘আত ও ইমামতি
সূচীপত্র
ছালাতের পদ্ধতি
সূচীপত্র
ছালাতুল জুম‘আ
সূচীপত্র
ছালাতুল জানাযা
সূচীপত্র

Wednesday 11 November 2015

কুরআন এবং হিকমাহ্ বলতে রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নাহ্ অর্থাৎ হাদিসকেই বুঝায়


মহান আল্লাহ্ বলেন,

“তিনি তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছেন কিতাব এবং হিকমাহ্ যা দ্বারা তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দান করেন।...” -সূরা বাক্বারাহ্, ২/২৩১


এই আয়াতে আল্লাহ্ কিতাব এবং হিকমাহ্ বলতে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আলাদা দু’টি বিষয় বুঝাননি, বরং একটি বিষয়কেই বুঝিয়েছেন। কারণ আয়াতের পরের অংশে আল্লাহ্ বলেছেন “যা দ্বারা”তিনি তোমাদের উপদেশ দান করেন। এই “যা দ্বারা”শব্দটি হচ্ছে “বিহী”। আর এই “বিহী”শব্দটি একবচন অর্থাৎ একটি বিষয়। যদি কিতাব এবং হিকমাহ্ দু’টি বিষয় হতো তাহলে আল্লাহ্ “বিহী”একবচনের পরিবর্তে “হুমা”দ্বিবচন ব্যবহার করতেন। কিন্তু আল্লাহ্ “হুমা”দ্বিবচন শব্দটি ব্যবহার না করে “হু”একবচন শব্দটি ব্যবহার করে প্রমাণ করে দিয়েছেন কিতাব এবং হিকমাহ্ একই বিষয় অর্থাৎ শুধুই কুরআন-আর কুরআন-ই অবতীর্ণ করেছেন।


উত্তর ঃ এই ব্যাখ্যাটি একেবারেই মনগড়া। যারা আরবী ব্যাকরণে অজ্ঞ তারাই মূলত এভাবে কুরআনের অপব্যাখ্যা করে থাকে। কারণ, আরবীতে সংক্ষেপ করার জন্য দ্বিবচনকে কখনো একবচন দেখানো হয়। যেমন, মহান আল্লাহ্ বলেন,


যারা স্বর্ণ এবং রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহ্’র পথে ব্যয় করেনা...” -সূরা তাওবাহ্, ৯/৩৪


এই আয়াতে আল্লাহ্ তায়ালা স্বর্ণ এবং রূপা দু’টি বস্তুর কথা বলেছেন। কিন্তু আয়াতের পরবর্তী অংশে এই দু’টি বস্তুকে “হা” একবচন ব্যবহার করে বলা হয়েছে তা আল্লাহ্’র পথে ব্যয় করেনা। এখন বুঝের বিষয় হচ্ছে দু’টি বস্তুকে বুঝানোর জন্য দ্বিবচন “হুমা”ব্যবহার না করে “হা”একবচন ব্যবহার হল কেন? মূলতঃ আরবী ব্যাকরণে দ্বিবচনকে কখনো একবচন দেখানো হয়।


অতএব, বুঝা গেল যে, কিতাব এবং হিকমাহ্ শব্দটিকে “হু” একবচন শব্দটি দ্বারা উল্লেখ করার কারণে কখনই এই দু’টি বিষয় এক নয়। বরং সংক্ষেপ করার জন্য তা একবচন দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ কিতাব বলতে কুরআন এবং হিকমাহ্ বলতে রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নাহ্ অর্থাৎ হাদিসকেই বুঝায়।